শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:১৯ পূর্বাহ্ন
ভয়েস প্রতিবেদক:
টেকনাফের হোয়াইক্যং দৈংগাকাটায় ছাড়পত্র ছাড়াই গড়ে উঠেছে ‘এ.এইচ.বি ও এম.কে.বি’ নামের দুটি অবৈধ ইটভাটা। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বনাঞ্চল ও ফসলি জমি বিনষ্ট করে এই দুটি ইটভাটা তৈরি করা হয়। এ নিয়ে প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠে স্থানীয় এলাকাবাসী ও পরিবেশবাদীরা। এলাকাবাসী এই দুটি ইটভাটার বিরুদ্ধে মহামান্য হাইকোর্টে রিট করে। যার নং—৬৯৪৬/২১। এই রিটের আলোকে গত ০৮ নভেম্বর ইটভাটা দুটি ভাঙ্গার জন্য রুল ইস্যু করে। উক্ত রুলটি হাইকোর্টের একজন স্পেশাল মেসেঞ্জার দ্বারা জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার, পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর প্রেরণ করেন। এবং আগামী ২২ নভেম্বরের মধ্যে ইটভাটা দুটি কেন ভাঙ্গা হবে মর্মে জানতে চাওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, জনৈক মীর কাশেম এম.কে.বি ব্রিকস ও মো. আবুল হাসেম এ. এ.এইচ.বি অবৈধ ইটভাটা দুটি পরিবেশগত ছাড়পত্রবিহীন অবৈধ এই ইটভাটা গড়ে তোলে। ইট তৈরি করতে নির্বিচারে উজাড় হচ্ছে বনের কাঠ। ফলে নষ্ট হচ্ছে প্রতিবেশ। ইটভাটায় কয়লা পুড়ানোর কথা বললেও মূলতঃ রাতের অন্ধকারে গোপনে চুল্লিতে কাঠ ঢুকানো হয়। এসব কাঠ সংগ্রহ করা হয় পাশ^র্বর্তী পাহাড়ি এলাকা থেকে। কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে উজাড় হয়ে যাচ্ছে সামাজিক বনায়নও।
এই ইটভাটা দুটির ১০০ গজের মধ্যে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি সরকারি ক্লিনিক, দুটি মসজিদ, ফসলি জমি ও বনবিভাগের বাগান অনেক ঘরবাড়ি রয়েছে। যা ব্রিকফিল্ড স্থাপন ও নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩ এর সুস্পষ্ট লংঘন। এই ইটভাটার কারণে কমলমতি শিশুরা শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা, ক্যান্সার সহ বহু জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারী এম.কে.বিকে ৬ লক্ষ টাকা ও এ.এইচ.বিকে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তর। এছাড়া বিগত ৬ মাস আগে এম.কে.বিকে ও ও এ.এইচ.বিকে কতৃর্পক্ষকে পরিবেশ অধিদপ্তর নোটিশ প্রদান করে। যার স্বারক নং২২০২২২০০২১৩৭১০৯৭১৭৭৯৩। পাশাপাশি গত ১৫ জানুয়ারী পরিবেশ অধিদপ্তরের ২১০ তম সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক এই দুটি ইটভাটার ছাড়পত্র বাতিল করা হয়। যার স্বারক নং—২২০২২২০০২১৩৭১০৯৭১৭৩০৪।
এ বিষয়ে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক সংযুক্তা দাশ বলেন, এ.এইচ.বি ইটভাটার ৫০০ মিটারে মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে এবং এম.কে.বি এ এক কিলোমিটারের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কৃষি জমি রয়েছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
কিন্তু এখনো ইটভাটা দুটি সম্পূর্ণ অবৈধভাবে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে পরিবেশের আদেশ উপেক্ষা করে এখনো চলমান আছে।
এ ব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার পারভেজ চৌধুরী বলেন, ‘এ.এইচ.বি ও এম.কে.বি’ নামের দুটি অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না মর্মে হাইকোর্টের রুলের অনুলিপি এসেছে। আমরা দ্রুত এই দুটি ইটভাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিব।
ভয়েস/আআ